আজ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শুভ ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’। এটি ‘আশ্বিনী পূর্ণিমা’ নামেও পরিচিত। আত্মশুদ্ধি অর্জনের মধ্য দিয়ে অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণের আয়োজন এই প্রবারণা।
‘প্রবারণা’ শব্দের অর্থ:‘প্র’ মানে ‘উত্তমভাবে’ এবং ‘বরণা’ মানে ‘বরণ করা’ বা ‘স্বীকার করা’। অর্থাৎ ‘প্রবারণা’ মানে হলো নিজের ভুল বা ত্রুটি স্বীকার করে তা সংশোধনের জন্য প্রতিজ্ঞা গ্রহণ।
ধর্মীয় তাৎপর্য:এই দিনে ভিক্ষুরা একে অপরের কাছে নিজেদের ত্রুটি বা ভুলের কথা স্বীকার করেন এবং পরস্পরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এটি আত্মশুদ্ধি, বিনয় ও সাম্যবোধের প্রতীক।প্রবারণা পূর্ণিমা মানুষকে আত্মসংযম, সহনশীলতা, সত্যবাদিতা ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ শেখায়। এটি আত্মসমালোচনা ও পরিশুদ্ধ জীবনের আহ্বান জানায়।
প্রবারণার পূর্ণিমার দিন আকাশ প্রদীপ প্রজ্বালন ( ফানুস বাতি ওড়ানো) হয়ে থাকে। কথিত আছে, সিদ্ধার্থ গৌতম গৃহত্যাগ করে অনোমা নদীর পরপারে উপনীত হয়ে সারথী ছন্নকে অশ্ব কন্থক ও শরীরের আভরণাদি প্রদান করে বিদায় দেন। অতঃপর তিনি ভাবলেন, ‘আমার মস্তকে সুবিন্যস্ত কেশকলাপ প্রব্রজিতের পক্ষে শোভনীয় নহে।’ তিনি দক্ষিণ হস্তে অসি এবং বাম হস্তে রাজমুকুটসহ কেশকলাপ ধারণ করে কেটে ঊর্ধ্বদিকে নিক্ষেপ করে সত্যক্রিয়া করেছিলেন, ‘যদি সত্যিই আমি ইহজন্মে মহাজ্ঞান (বুদ্ধত্ব) লাভে সমর্থ হই তাহলে এই মুকুটসহ কেশরাশি ঊর্ধ্বাকাশে উত্থিত হবে।’ তাঁর কেশরাশি আকাশে উত্থিত হলো। তাবতিংশ স্বর্গের দেবগণ কেশরাশি নিয়ে গিয়ে চুলমনি চৈত্য প্রতিষ্ঠা করে পূজা করতে লাগলেন। বৌদ্ধরা বুদ্ধের সেই কেশরাশির প্রতি পূজা ও সম্মান প্রদর্শনের জন্য আশ্বিনী পূর্ণিমায় আকাশ প্রদীপ বা ফানুস বাতি আমরা উড়িয়ে থাকি।আকাশ প্রদীপ যেহেতু বুদ্ধের সেই কেশরাশির প্রতি পূজা ও সম্মান প্রদর্শনের জন্য উড়িয়ে থাকি তাই আমাদের উচিত ধর্মীয় নিয়ম নীতির মাধ্যমে আকাশ প্রদীপ উত্তোলন করা।