সর্বশেষ

মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫

বাংলাদেশ বৌদ্ধ শিল্পী সম্মিলন পরিষদ কর্তৃক প্রথম সম্মেলন ও অভিষেক আগামী ২৩ আগস্ট।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ শিল্পী সম্মিলন পরিষদ কর্তৃক প্রথম সম্মেলন ও অভিষেক আগামী ২৩ আগস্ট।

চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ বৌদ্ধ শিল্পী সম্মেলন পরিষদের প্রথম সম্মেলন ও অভিষেক-২০২৫। 'সংস্কৃতি বিকাশে • সাম্যের জয়গানে' স্লোগানকে সামনে রেখে আগামী ২৩ আগস্ট, শুক্রবার, বিকেল ৫টায় থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) অডিটোরিয়ামে এই অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হবে।

প্রথম পর্ব: সম্মেলন ও অভিষেক

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে থাকবে সম্মেলন ও অভিষেক-২০২৪। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সদস্য (যুগ্ম সচিব) সুমন বড়ুয়া। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন ড. প্রীতি বড়ুয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন সূর্যপ্রতাপ গ্লোবাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়োন সোহেল বড়ুয়া এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য রুবেল বড়ুয়া।

অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক হিসেবে থাকছেন অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক অশোক বড়ুয়া। আলোচকদের মধ্যে আরও থাকবেন মাছরাঙা টেলিভিশনের নির্বাহী প্রযোজক স্বীকৃতি প্রসাদ বড়ুয়া, সংগীতশিল্পী পরমেশ বড়ুয়া এবং অভিনেতা ও নাট্যকার সুমন টিংকু।

বাংলাদেশ বৌদ্ধ শিল্পী সম্মেলন পরিষদের সভাপতি বিপুল কান্তি বড়ুয়া এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। স্বাগত বক্তব্য দেবেন পরিষদের মহাসচিব শ্যামল চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করবেন সুপ্রীয় কুমার বড়ুয়া ও সঞ্চারী বড়ুয়া সাচী।

দ্বিতীয় পর্ব: সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা

দ্বিতীয় পর্বে থাকবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, যার শিরোনাম 'নব রবে অরুণোদয়ে'। এই পর্বের আবৃত্তি নির্দেশনায় আছেন বনকুসুম বড়ুয়া এবং সংগীত পরিচালনায় জুলি বড়ুয়া। নৃত্য নির্দেশনা দিয়েছেন অনন্য বড়ুয়া এবং শিল্প নির্দেশনায় রয়েছেন হেমা বড়ুয়া। নাট্য নির্দেশনার দায়িত্বে আছেন সীমান্ত বড়ুয়া এবং তথ্যচিত্র রচনা করেছেন সেঁজুতি বড়ুয়া। এই পর্বের সঞ্চালনায় থাকবেন ইলা বড়ুয়া ও সেঁজুতি বড়ুয়া।


শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫

রত্নসম্ভার সম্মিলনী সংঘটন কর্তৃক আয়োজিত মেধাবৃত্তি ও সূত্রপাঠ প্রতিযোগিতা সম্পন্ন

রত্নসম্ভার সম্মিলনী সংঘটন কর্তৃক আয়োজিত মেধাবৃত্তি ও সূত্রপাঠ প্রতিযোগিতা সম্পন্ন

 চট্টগ্রাম, ১৫ই আগস্ট: রত্নসম্ভার সম্মিলনী সংঘটন কর্তৃক আয়োজিত দুই দিনব্যাপী মেধাবৃত্তি ও সূত্রপাঠ প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে। ১৪ ও ১৫ই আগস্ট চান্দগাঁও-এর ঐতিহ্যবাহী পুণ্যতীর্থ সার্বজনীন শাক্যমুনি বিহারে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রত্নসম্ভার সম্মিলনী সংঘটনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মহাস্থবির এস লোকজিৎ ভিক্ষু। প্রতিযোগিতার বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন পণ্ডিত প্রবর ভিক্ষুসংঘ।

প্রথম দিনে, ১৪ই আগস্ট, 'ক' ও 'খ' বিভাগে নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সূত্রপাঠ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। পরের দিন, ১৫ই আগস্ট, 'গ', 'ঘ' ও 'ঙ' বিভাগে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে উন্মুক্ত শ্রেণির প্রতিযোগীরা তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করে।

এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি আগ্রহ এবং সূত্রপাঠের চর্চা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। রত্নসম্ভার সম্মিলনী সংঘটন ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে আশা করি।

বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠনের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত

অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠনের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত

 

চট্টগ্রাম: ধর্মীয় এবং সেবামূলক সংগঠন 'অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠন'-এর নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে। গত ১১ই আগস্ট সোমবার এক সাধারণ সভার মাধ্যমে এই কমিটি গঠন করা হয়। সংগঠনের সম্মানিত উপদেষ্টা, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং আহ্বায়ক কমিটির সকলের সম্মতিতে ২৯ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটি আগামী দুই বছরের জন্য (২০২৫-২০২৭) দায়িত্ব পালন করবে।

নবগঠিত এই কমিটির মাধ্যমে সংগঠনের মানবিক এবং সেবামূলক কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিতে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন শ্রীমাণ সুজয় বড়ুয়া। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন শ্রীমাণ হিমেল বড়ুয়া। এছাড়া, শ্রীমান অভি বড়ুয়াকে অর্থ সম্পাদক এবং শ্রীমান অমিত বড়ুয়াকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।এই কমিটি অনুমোদন করেছে অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রত্যয় বড়ুয়া নিলয়।

২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠন বিভিন্ন সামাজিক, মানবিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সেবামূলক কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। নতুন কমিটির সদস্যরা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কার্যক্রমে আরও বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়। নবগঠিত কমিটির হাত ধরে সংগঠনটি ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপ বাংলাদেশ ২০২৫-এর শিরোপা জিতল রোবো লাইফ টেকনোলজি

স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপ বাংলাদেশ ২০২৫-এর শিরোপা জিতল রোবো লাইফ টেকনোলজি

ঢাকা: বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টার্টআপ প্রতিযোগিতা স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপ বাংলাদেশ ২০২৫-এর গ্র্যান্ড ফিনালেতে বিজয়ী হয়েছে রোবো লাইফ টেকনোলজি। এই জয়ের মধ্য দিয়ে তারা ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ পুরস্কার পেয়েছে এবং দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে গ্লোবাল স্টার্টআপ ওয়ার্ল্ড কাপে। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে অনুষ্ঠিতব্য এই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ পুরস্কারের জন্য পিচ করার সুযোগ পাবে রোবো লাইফ টেকনোলজি।

১৪ আগস্ট, বৃহস্পতিবার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই আঞ্চলিক গ্র্যান্ড ফিনালেতে দেশের সেরা ১৫টি স্টার্টআপ দল অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় মাহামুদুর রহমান ও রওনাক জারিনের দল উইগ্রো প্রথম রানার-আপ এবং হাসিবুল হক প্রত্যয়, নাইমুল আজাদ ও আবু জুনায়েদের দল রকেট ওয়েভ দ্বিতীয় রানার-আপ হয়েছে। শীর্ষ ১০ দল বিশেষ নেটওয়ার্কিং সেশনে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পেয়েছে।

উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অতিথিরা

জমকালো এই সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি’র চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, ড্যাফোডিল ফ্যামিলির চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এম. আর. কবির এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসুম ইকবাল উপস্থিত ছিলেন।

অভিজ্ঞ বিচারক প্যানেল

প্রতিযোগিতার কান্ট্রি ডিরেক্টর ছিলেন ইনোভেশন অ্যান্ড এন্টারপ্রেনিউরশিপ বিভাগের প্রধান মো. কামরুজ্জামান দিদার এবং প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ছিলেন তরুণ উদ্যোক্তা ও লাইভ শপিং-এর সিইও মো. আশিক খান।

বিচারক প্যানেলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পেগাসাস টেক ভেঞ্চারসের পার্টনার উইলিয়াম রেইকার্ট উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, জাতীয় পর্যায়ে বিচারক হিসেবে ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. নাজিম হাসান সাত্তার, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই ডিভিশনের পরিচালক নওশাদ মুস্তাফা, বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেডের সিইও শওকাত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রফিউদ্দিন আহমেদ, ড্যাফোডিলের অধ্যাপক ড. রকিবুল কবির এবং এক্সক্লুসিভ ক্যান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদ নাসির।

বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

নন্দনকানন বুড্ডিস্ট অর্গানাইজেশন ফুটসাল টুর্ণামেন্ট সিজন-২ শুরু হচ্ছে আগামীকাল

নন্দনকানন বুড্ডিস্ট অর্গানাইজেশন ফুটসাল টুর্ণামেন্ট সিজন-২ শুরু হচ্ছে আগামীকাল



চট্টগ্রামের বৌদ্ধ যুব সমাজকে একত্রিত করতে এবং তাদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগামী ১৫ ও ১৬ আগস্ট, শুক্র ও শনিবার, ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নন্দনকানন বুড্ডিস্ট অর্গানাইজেশন ফুটসাল টুর্নামেন্ট সিজন-২। নগরীর বায়েজিদ তারা গেট সংলগ্ন চট্টোটার্ফ মাঠে এই জমকালো আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে।
এই আসরে মোট ২০টি বৌদ্ধ যুব সংগঠন অংশগ্রহণ করবে। দলগুলোকে ৪টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে, যেখানে প্রতিটি গ্রুপে থাকছে ৫টি করে সংগঠন। অংশগ্রহণকারী দলগুলো হলো:
১. সীবলী সংসদ, চট্টগ্রাম।
২. কন্থক।
৩. নন্দন।
৪.ধর্মচক্র।
৫.আর্য সংঘ।
৬. চাটগাঁইয়া বন্ধুমহল।
৭. দুর্লভ।
৮. সম্যক।
৯. বুদ্ধজ্যোতি সংঘ।
১০. প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি সিইএসসি বুড্ডিস্ট ফ্যামিলি।
১১. বৌদ্ধ ছায়াঙ্গন।
১২. অরণ্যক।
১৩. নির্বাণ সংঘ।
১৪. আর্যমিত্র বৌদ্ধ সংগঠন।
১৫. নবজাগরণ।
১৬. মঙ্গল সংঘ।
১৭. এনিমেল শেল্টার।।
১৮. বাংলাদেশ সীবলি মানবিক ফাউন্ডেশন ।
১৯. মৈত্রী জাগরন।
২০. সারনাথ।

টুর্নামেন্টটি কেবল একটি খেলা নয়, বরং এটি যুব সমাজের মধ্যে সম্প্রীতি, শৃঙ্খলা এবং নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, টুর্নামেন্টের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং একটি সফল ও উৎসবমুখর আয়োজনের জন্য তারা আশাবাদী। এই টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে যুব সমাজের মধ্যে একটি নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫

বান্দরবান বৌদ্ধ ছাত্র পরিষদের নতুন কমিটি গঠিত

বান্দরবান বৌদ্ধ ছাত্র পরিষদের নতুন কমিটি গঠিত

বান্দরবান: বান্দরবানের বৌদ্ধ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত বান্দরবান বৌদ্ধ ছাত্র পরিষদের ২০২৫-২০২৬ কার্যবর্ষের জন্য নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। গত শুক্রবার (০৮/০৮/২০২৫) সংগঠনের এক সাধারণ সভায় পূর্বের কমিটি (২০২৪-২০২৫) বিলুপ্ত ঘোষণা করে এই নতুন কমিটি গঠন করা হয়।

নির্বাচনের মাধ্যমে সৈকত বড়ুয়াকে সভাপতি, অমিরণ বড়ুয়াকে সাধারণ সম্পাদক এবং সৌরভ বড়ুয়াকে অর্থ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। নতুন এই কমিটি বান্দরবান বৌদ্ধ ছাত্র সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে


বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫

আজ শুভ শ্রাবণী পূর্ণিমা

আজ শুভ শ্রাবণী পূর্ণিমা

এই পূর্ণিমা দিনটি বৌদ্ধদের জন্য ঐতিহাসিক অভিস্মরণীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। তথাগত বুদ্ধের পরিনির্বাণের ৩ মাস পরে মগধরাজ অজাতশত্রুর পৃষ্ঠপোষকতায় অরহত মহাকশ্যপ স্থবিরের সভাপতিত্বে রাজগৃহের বেভার পর্বতের সপ্তপর্ণী গুহায় ৫০০ শত অরহত ভিক্ষুদের উপস্থিতিতে প্রথম বৌদ্ধ সঙ্গীতি বা ভিক্ষু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই শ্রাবণী পূর্ণিমা তিথিতে।

 তথাগতের পরিনির্বাণ সংবাদ শোনার পর যাঁরা অনেকেই বুদ্ধকে দেখেনি তাঁরা শোকাবেগ সংবরণ করতে না পেরে কেউ বুক চাপড়িয়ে, কেউ মাথায় হাত দিয়ে, কেউ কেউ ছিন্নবৎ ভূতলে পতিত হয়ে ইতস্ততঃ এই বলে ক্রন্দন করছিলেন যে, কেন অতিশীঘ্রই ভগবান নির্বাপিত হলেন; অতি শীঘ্রই চক্ষুষ্মান পৃথিবী হতে অর্ন্তহিত হলেন। বিশেষ করে যারা পৃথকজন ভিক্ষু ছিলেন অর্থাৎ মার্গফল প্রাপ্ত হননি তারা কান্না থামাতে পারছিলেন না। সেই ভিক্ষুদের মধ্যে বৃদ্ধকালে প্রব্রজিত সুভদ্র নামে এক ভিক্ষু ছিলেন। তিনি শোকাহত ভিক্ষুগণকে বললেন তোমরা শোক করিও না। বিলাপ করিও না। আমরা এখন সেই তথাগতের বিভিন্ন শাসন, আদেশ ও নির্দেশ হতে মুক্তি পেয়েছি। এখন আমরা যা ইচ্ছা তা করতে পারব। বৃদ্ধ ভিক্ষুর কথা শুনে মহাকশ্যপ স্থবির মহোদয় অত্যন্ত মানসিকভাবে ব্যথিত হলেন। তিনি চিন্তা করল ভগবান পরিনির্বাণ হয়েছেন মাত্র এক সপ্তাহ হয়েছে এখনও তাঁর সুবর্ণময় দেহ ধরণীপৃষ্ঠে বিদ্যমান। সেই মুহূর্ত এই বৃদ্ধ ভিক্ষুর উক্তি যা বুদ্ধের শাসনে অশনি সংকেত।

অতঃপর দাহক্রিয়া শেষ হলে অরহত মহাকশ্যপ সেখানে উপস্থিত ৭ লক্ষ ভিক্ষুর সামনে বৃদ্ধ ভিক্ষু সুভদ্রের অন্যায় উক্তির কথা প্রকাশ করলেন। উপস্থিত ভিক্ষুগণ সুভদ্র ভাষিত উক্তি শুনে ভীষণ মর্মাহত হলেন। অরহত মহাকশ্যপ ধর্ম বিনয় পরিশুদ্ধ করার প্রস্তাব করলে সকলে তা সমর্থন করলেন। উপস্থিত ভিক্ষুগণের অনুরোধে অরহত মহাকশ্যপ বুদ্ধ প্রশংসিত ত্রিপিটক বিশারদ ধর্ম বিনয়ে গভীর জ্ঞানী প্রতিসম্ভিদাপ্রাপ্ত এরূপ ৫০০ অরহত ভিক্ষু নির্বাচন করলেন। আনন্দ স্থবির তখনও অরহত হতে পারেননি বলে তাঁর নাম উল্লেখ করেননি। ভদন্ত আনন্দ স্থবিরের নাম তালিকাভূক্ত করার জন্য উপস্থিত ভিক্ষুসংঘ বিনীতভাবে অনুরোধ জানালে অরহত মহাকশ্যপ তাঁকেও তালিকাভূক্ত করলেন। কারণ তিনি ভগবানের প্রধান সেবক হিসাবে সবসময় কাছে কাছে থাকতেন বিধায় সম্মেলনে স্মৃতিমান আনন্দের প্রয়োজন অত্যন্ত বেশী। এই সম্মেলন কখন কোথায় অনুষ্ঠিত হবে সেই বিষয়ে পরামর্শ করার জন্য তালিকাভূক্ত ভিক্ষুদের নিয়ে অরহত মহাকশ্যপ রাজগৃহ অভিমুখে যাত্রা করলেন। অন্যান্য ভিক্ষুসংঘকে তাদের নিজ নিজ বাসস্থানে বা আরামে চলে যাবার নির্দেশ দিলেন। 

তখন মগধের রাজা ধর্মপ্রাণ অজাতশত্র“ ভিক্ষুসংঘের আগমন সংবাদ পেয়ে খুবই খুশী হলেন এবং অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন। রাজগৃহে উপস্থিত হয়ে রাজার নিকট ধর্ম বিনয় সঙ্গায়ণ করার প্রস্তাব করলে রাজা তাৎক্ষণিকভাবে সম্মত হয়ে অরহত মহাকশ্যপকে বললেন, আপনারা বিশ্বস্থভাবে ধর্ম সঙ্গায়ণ করুন আমার রাজাজ্ঞা আপনাদের ধর্মাজ্ঞা সু-প্রতিষ্ঠায় প্রবর্তিত হউক। অতঃপর রাজা ভিক্ষুদের অনুমতিক্রমে সপ্তপর্ণী গুহাদ্বারে পঞ্চশত ধর্মমন্ডপ প্রস্তুত করলেন। দক্ষিণ দিকে উত্তরমুখী করে স্থবিরগণের আসন সু-সজ্জিত করলেন। মন্ডপের মধ্যভাগে পূর্বমুখী করে ভগবানের আসন তুল্য ধর্মাসন নির্মাণ করে দন্ডখচিত ব্যজনী স্থাপন পূর্বক দেবতুল্য চমৎকার এক মন্ডপ তৈরী করালেন।

শ্রাবণী পূর্ণিমার পূর্বদিন ভিক্ষুসংঘ ভদন্ত আনন্দ স্থবিরকে উৎসাহ দিতে লাগলেন। অরহত না হয়ে সম্মেলনে যোগদান করা আপনার উচিত হবে কি? আমাদের অনুরোধে হয়ত আপনাকে তালিকাভূক্ত করেছেন কিন্তু বীর্যবানের পক্ষে ইহা শোভনীয় নয়। ধর্ম ভান্ডারাধ্যক্ষ হিসাবে খ্যাত, তথাগতের সঙ্গে ছায়ার মত বিচরণকারী ধর্ম বিনয়ে পন্ডিত আনন্দ স্থবির লজ্জায় এক রাত্রির মধ্যেই অরহত্ত্ব ফল প্রাপ্ত হওয়ার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হলেন। আনন্দ ভাবলেন আমাকে অরহত হতে হবে এবং অরহত হয়েই সম্মেলনে যোগদান করতে হবে। সমস্ত রাত্রি তিনি তার মনের শক্তি দিয়ে কায়গত স্মৃতি ভাবনায় রত হলেন। সারারাত্রি অবিশ্রান্ত কঠোর সাধনা করে বিনিদ্র রজনী যাপন করলেন তথাপি তৃষ্ণামুক্ত হতে পারেননি। বার বার বুদ্ধের কথা স্মরণ করছেন, বুদ্ধ বলেছিলেন -অচিরেই তুমি তৃষ্ণামুক্ত হবে। বুদ্ধবাণী তো মিথ্যা হতে পারে না। হতাশায় ও বেদনায় ক্লান্ত হয়ে শয়ন উদ্দেশ্যে ভূমিতল হতে পদতল উঠাচ্ছেন। হেলে পড়ছেন বালিশে মাথা রাখার ইচ্ছায়। ঠিক সেই সময়েই তিনি অরহত্ত্ব মার্গফল লাভ করলেন। সম্মেলন আরম্ভের কিছুক্ষণ পূর্বেই তিনি তাঁর জন্য রক্ষিত আসনে মাটি ভেদ করে উপবিষ্ট হলেন। উপস্থিত সকলেই বুঝলেন যে আনন্দ বীর্যবানের পরিচয় দিয়েছেন এবং ভিক্ষু করণীয় কাজ সম্পাদন করেছেন। যথাসময়ে অরহত মহাকশ্যপের সভাপতিত্বে বক্তব্য প্রদানের জন্য বিনয়ধর উপালী স্থবিরকে আহবান জানালেন। উপালী স্থবির ধর্মাসনে বসে বিনয় আবৃত্তি করলেন। পূর্বোক্ত নিয়মে আনন্দ স্থবির ধর্মাসনে বসলেন। অরহত মহাকশ্যপ তাঁকে সূত্র ও অভিধর্ম বিষয়ে প্রশ্ন করলেন অরহত আনন্দ স্থবির উত্তর প্রদান করেন। সেই উত্তর যথাযথ হচ্ছে কিনা উপস্থিত ভিক্ষুরা তা পর্যালোচনা করেন। এইভাবে পঞ্চশত অরহত দ্বারা প্রথম সঙ্গীতির কার্য্য সু-সম্পাদিত হয়েছিল বলে ইহা পঞ্চশতিকা সঙ্গীতি নামে অভিহিত। 

অতএব, এই শ্রাবণী পূর্ণিমা দিনটি উল্লেখ যোগ্য দুটি বিষয়ই বৌদ্ধদের ঐতিহাসিক অভিস্মরণীয় দিন। বিশেষত বুদ্ধের জীবদ্দশায় ৪৫ বৎসর ব্যাপী ধর্ম প্রচার করে যা যা তিনি ভাষণ করেছিলেন, সেই ভাষিত উপদেশ নিয়েই ত্রিপিটক শাস্ত্র। সেই ত্রিপিট শাস্ত্রই প্রথম সঙ্গায়ণে থেকে চয়ণ করা হয়েছিল।